রেলের জাদুঘরটিই যেন এখন জাদুঘরে!

 Downloadd Banner


৪ বছর ধরে বন্ধ হয়ে আছে বাংলাদেশের একমাত্র রেলওয়ে জাদুঘর। চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে অবস্থিত এ জাদুঘরটি পুরোপুরি ধ্বংসের পথে। রেলের ইতিহাস অনুসন্ধানকারী মানুষদের কাছে রেলওয়ে জাদুঘরটি এখন সোনালী অতীত।

১২ একর জায়গায় গড়ে ওঠা জাদুঘরের আশপাশ দখল হয়ে গেছে অনেক আগেই। পাহাড় চূড়ায় ৪ বছর ধরে তালাবদ্ধ অবস্থায় ঠাঁই দাঁড়িয়ে জাদুঘরের মূল ভবনটি। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দাবি, সংস্কার এবং জনবল সংকটের কারণে চালু করা যাচ্ছে না।

রেলওয়ের শত বছরের ইতিহাস ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করার জন্য রেলওয়ে জাদুঘর সময়ের এ বিশাল পরিক্রমাকে ধরে রাখার উদ্দেশে ২০০৩ সালে পাহাড়তলী ওয়ার্ডের রেলওয়ে কেরিজ অ্যান্ড ওয়াগন কারখানার অপরপাশে নয়নাভিরাম সবুজ প্রকৃতির মাঝে প্রায় ১২ একর জায়গার উপরে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ রেলওয়ের একমাত্র জাদুঘর।

জাদুঘরের বিল্ডিংটি দ্বিতল, ৪৩৯৪ বর্গফুট যেটি কাঠ ও ইট দিয়ে তৈরি এবং ছাদ হিসেবে আছে টিনের ছাউনি। জাদুঘরটি আগে বাংলো হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ২০১৬ সালে পুরনো ভবনটির সংস্কার কাজ শুরু হলে তা বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ না হওয়ায় আজও তালা ঝুলছে জাদুঘরে। পুরোপুরি বন্ধ হওয়ার উপক্রম।

জাদুঘরে বাংলাদেশ রেলওয়ের অতীতের যুগের আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে (১৯৪২), ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে (১৯৪৭) এবং পাকিস্তান রেলওয়ে (১৯৬১)  ব্যবহৃত বিভিন্ন নিদর্শন ও বস্তুর সমৃদ্ধ সংগ্রহ রয়েছে।

সংরক্ষিত নিদর্শনগুলো মূলত রেলওয়ের যান্ত্রিক, বৈদ্যুতিক, টেলিযোগযোগ, সংকেত, ট্র্যাফিক এবং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগগুলির অন্তর্গত।

এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের ল্যাম্প (পয়েন্ট ইনডিকেটর ল্যাম্প,হ্যান্ড সিগনাল ল্যাম্প), লেভেলিং টেলিস্কোপ, হ্যান্ড সিগনালিং ফ্ল্যাগ (রেড ও গ্রিন), লাইট, ফ্যান এবং ঘণ্টা, ইউনিফর্ম এবং স্টেশন মাস্টারদের আনুষঙ্গিক, সংকেত সরঞ্জাম, ট্রান্সমিটার, অ্যানালগ টেলিফোন, মনোগ্রাম, ট্র্যাক সুইচ এবং রেলওয়ের স্লিপার।

সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জাদুঘরের কাঠামো দিন দিন ধ্বংসপ্রাপ্ত হচ্ছে। সুনিপুণ কারুকাজ সম্বলিত দ্বিতল ভবনটির বিভিন্ন অংশ ভেঙে পড়ছে, ভবনের বাইরে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ মাঝপথে এসে বন্ধ হয়ে আছে। ফলে খোলামেলা হওয়ার কারণে এখানে মাদক সেবন, জুয়ার আড্ডাসহ নানা ধরনের অপকর্ম চলছে প্রকাশ্যে। যেন দেখার কেউ নাই এই যাদুঘরের।

যদি সঠিকভাবে সংস্কার করা হয় তবে জাদুঘরটি একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান হতে পারে জানিয়ে রেলের চট্টগ্রাম বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা সময় নিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জাদুঘর বন্ধ থাকার কারণে ভেতরের মূল্যবান জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। চালু করা সম্ভব না হলে জাদুঘরটি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে। একই সঙ্গে  উপমহাদেশের রেল যোগাযোগের সাক্ষী হয়ে থাকা বিরল সব জিনিসপত্র ধ্বংস হবে।

পাহাড়তলী ওয়ার্কশপের একজন কর্মকর্তা জানান, আগে জাদুঘর দেখতে প্রতিদিনই এখানে দর্শনার্থীরা আসতেন। এখনও অনেকেই এসে তা বন্ধ দেখে ফিরে যান। অবহেলায় মূল্যবান জিনিসপত্র নষ্ট হচ্ছে জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ তিনি।

জাদুঘরের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে সময় সংবাদকে কিছুই জানাতে পারেন নি রেলের চট্টগ্রাম বিভাগের ব্যবস্থাপক সাদিকুর রহমান। বলেন, পরে খোঁজ খবর নিয়ে জানাতে পারবেন।

রেলের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক নাসির উদ্দীন আহমেদ জানান, পর্যাপ্ত বাজেট আর লোকবলের অভাবে প্রায় বন্ধ হতে বসেছে দেশের একমাত্র রেল জাদুঘর। অনেকবার মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে তিনিও বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে কিছুই জানাতে পারেননি।

এসব বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন সময় নিউজকে বলেন, জাদুঘরটিতে আছে বাংলাদেশ রেলওয়ের অসংখ্য পুরনো উৎস। যার মধ্যে নিহিত আছে শেখার ও জানার সুযোগ। উপমহাদেশের যোগাযোগের এক জীবন্ত দলিল বুকে নিয়ে ক্ষয়ে ক্ষয়ে ধ্বংসের দিকে পতিত হচ্ছে রেলের যাদুঘর। অথচ এটি হতে পারে আন্তর্জাতিকভাবে রেল গবেষণার এক মূল্যবান বিদ্যাপীঠ। অতিদ্রুত লোকবল নিয়োগ দিয়ে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে রেল জাদুঘরটিকে আধুনিক স্থাপনায় পরিণত করা হবে।
Show More
Featured Theme

mmasudrana.com'Updates of Our Website are Used For Personal Use, so Please do Not Use it Without Permission...


Listener question: ‘How do I set up a private website only my family can see?’There are plenty of ways for friends and family to stay in contact during the pandemic,.but when it involves many people, it can quickly become overwhelming. Not everybody is on social media,and we take for granted that most people seemingly know how it works. “What is the easiest way to keep up to date with everyone? We would also like to archive and share family photos and stories handed down. We also have quite a bank of genealogy research completed on both sides of the family,”